রবিবার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞাপন :
সংবাদিক নিয়োগ! আপনি যদি সাংবাদিকতা এবং প্রতিবেদনে অভিজ্ঞ হন এবং ব্রেকিং নিউজ থেকে প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য আগ্রহী হন, তবে সম্মানিত সংবাদ সংস্থা তে আপনার জন্য সুযোগ আছে। সংবাদিক মান্যতা এবং প্রতিবেদন ক্ষমতা সাথে জয়েন করুন।
সংবাদ শিরোনাম
নারী দিবসে সামনে রেখে সম্মিলিত নারী ফোরামের সংবাদ সম্মেলন চাঁদপুরে মামা-মামির নির্যাতনের শিকার ভাগ্নি: পুরো শরীর জুড়ে আঘাতের চিহ্ন কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের যাকাত শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় সাংবাদিকদের সম্মানে মহানগর ছাত্রশিবিরের ইফতার দোয়া মাহফিল নাটোরে টিসিবির পণ্য সংগ্রহের সময়ে সংঘর্ষ জয়পুরহাটে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে দোকানে ঢুকে গেলো ট্রাক আট মাস ধরে বেতন না পেয়ে আর্থিক সংকটে চাঁদপুরের ২২৮ সিএইচসিপি খেলাধুলার মান উন্নয়ন ও কুমিল্লার ক্রীড়াঙ্গনের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে-জেলা ক্রীড়া সংস্থার কুমিল্লা শহরের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ২৩ বীর সেনা ক্যাম্পের দৃঢ় পদক্ষেপ

সকল মানুষকে একটি বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা আমাদের দায়িত্ব: প্রধান উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক:

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এই নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব হলো সকল মানুষকে একটি বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা।

তিনি বলেন, পারিবারিক জীবনে মতভেদ থাকবে, বাগবিতণ্ডা হবে, কিন্তু আমরা কেউ কারও শত্রু হবো না। কাউকে তার মতামতের জন্য শত্রু মনে করবো না। কাউকে ধর্মের কারণে শত্রু মনে করবো না। আমরা সবাই সমান। কেউ কারও ওপরে বা নিচে নয়, এই ধারণা আমরা জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের আয়োজনে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

লিখিত বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা, যার ফলে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশ স্বাধীন করার মহান ব্রত নিয়ে একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে বাঙালি সেনারা সেনানিবাস ত্যাগ করে সশস্ত্রযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। একই সঙ্গে এই দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-জনতা এবং সাধারণ মানুষ সবাই যার যা কিছু ছিল তাই নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, যা এক বিশাল জনযুদ্ধে রূপ নেয়। আমাদের মা-বোনেরা মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণসহ বিভিন্নভাবে যুদ্ধে সহযোগিতা করেছেন।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধরত সকল বাহিনীকে ‘বাংলাদেশ ফোর্সেস’ নামে সাংগঠনিক রূপ দেওয়া হয়। সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে যুদ্ধ পরিচালিত হয়। মাত্র দুটি গানবোট ‘পদ্মা’ ও ‘পলাশ’ নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী জলপথে যুদ্ধ শুরু করে। এছাড়াও পাকিস্তান নৌবাহিনীতে কর্মরত বাংলাদেশি সাবমেরিনার এবং নাবিকদের সমন্বয়ে গঠিত অকুতোভয় নৌ কমান্ডো দল ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নামে একটি সাহসী আক্রমণ পরিচালনা করে এবং বিভিন্ন নদীবন্দরে খাদ্য ও রসদবোঝাই শত্রুজাহাজ ডুবিয়ে দিতে সক্ষম হয়। বিমান বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত ‘কিলো ফ্লাইট’ চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জের জ্বালানি ডিপোসহ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সফল আক্রমণ পরিচালনা করে। মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর এই অবদান সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগের সঙ্গে একীভূত করার উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ২১ নভেম্বর পালিত হয় সশস্ত্র বাহিনী দিবস।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা চলমান রয়েছে। সময়ের আবর্তে অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা আজ বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপনকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মান জানানোর জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী যে উদ্যোগ প্রতিবছর নিচ্ছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।

তিনি আরও বলেন, বৈষম্যহীন, শোষণহীন, কল্যাণময় এবং মুক্তবাতাসের রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিলেন, আমি তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা এখন থেকেই বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে চাই যেন এই দেশে জনগণই সত্যিকার অর্থে সকল ক্ষমতার উৎস হয়। বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে একটি মানবিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সমাদৃত হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখবো। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হবে পারস্পরিক সম্মান, আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এবং বৈশ্বিক শান্তি ও অর্থনীতি সুসংহত করতে আমাদের একত্রে কাজ করতে হবে। তাই বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের তরুণ সমাজ সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও যেন মেধার ভিত্তিতে নিজ নিজ সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটিয়ে দেশ গঠনে অবদান রাখতে পারে, আমাদের সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আজ আমি খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পেয়ে গর্বিত ও অনুপ্রাণিত। নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের উত্তরাধিকারীদের কল্যাণার্থে যা কিছু প্রয়োজন তা করার জন্য আমরা দৃঢ়প্রত্যয়ী এবং এ ধারা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত