
নগরবাংলা নিউজ ডেস্ক।।
পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারে ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি নৌকায় চলাচল করছেন বন্যাদুর্গতরা ভারি বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুশিয়ারা নদী এবং হাকালুকি হাওরের পানি বেড়ে মৌলভীবাজারের ২০০ গ্রাম প্লাবিত। এসব এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ২ লাখ মানুষ। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। এছাড়া জেলার অন্য নদীরও পানি দ্রুত বাড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার রাজনগর উপজেলার চার ইউনিয়ন বন্যার পানি ঢুকেছে। এখানে বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। শ্রীমঙ্গলে পাঁচ ইউনিয়নের ১২ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ইউনিয়নে বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা চার হাজার। কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পাড় ভেঙে ৯ ইউনিয়ন ও পৌর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এখানেও পানিবন্দি হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
জেলার বড়লেখা উপজেলার বর্ণি, দাশের বাজার ও তালিমপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছেন কয়েকহাজার বাসিন্দা। বানের পানিতে বিদ্যুতের সাবস্টেশন ডুবে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। অন্যদিকে পাহাড় ধসে উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের আয়েশাবাগ চা বাগানে একজন নিহত হয়েছেন এবং সদর ইউনিয়নের কেছরিগুল গ্রামে একজন আহত হয়েছেন।
কুলাউড়া উপজেলায় হাকালুকি হাওরের উপচে উঠা ঢলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে ভূকশিমইল, ভাটেরা, জয়চন্ডী, ব্রাহ্মণবাজার, কাদিপুর ও কুলাউড়ার পৌরসভাসহ সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
কর্মধা ইউনিয়নের মহিষমারা গ্রামের ফানাই নদীর বাঁধ ভেঙে মহিষমারা, বাবনিয়া, হাশিমপুর, ভাতাইয়া ও পুরশাই গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে। গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
জুড়ী উপজেলায় গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে জায়ফরনগর ইউনিয়নসহ ৩০টি গ্রাম বানের পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় প্রায় ১৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব গ্রামের অধিকাংশ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ খানকার ২৪টি পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া জায়ফরনগর ইউনিয়নের গৌরীপুর ও সাগরনাল ইউনিয়নের কাশিনগর গোয়ালবাড়ি পশ্চিম শিলুয়া গ্রামে জুড়ী নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাঁধ মেরামত কাজ চলছে।
এদিকে সদর উপজেলায় ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে খলিলপুর, মনুমুখ, আখাইলকুড়া, কনকপুর, কামালপুর, চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এখানে বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা সাত হাজার ৫০০ জন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখতারুজ্জামান বলেন, মনু, ধলাই ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে পানি বাড়ছে। এ অবস্থায় বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন কর্তৃক কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বর ০৮৬১-৫২৭২৫।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জাগো নিউজকে বলেন, বন্যাদুর্গতদের সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে। রোববার থেকে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।